Atomic Structure of Matter (পদার্থের পারমাণবিক গঠন) – II

নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন বিন্যাস (Electron Configuration outside Nucleus):

ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ক্রমবর্ধমান ব্যাসের মোট সাতটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে। ইলেকট্রন গুলির আবর্তনের এই কক্ষপথকে স্থির কক্ষপথ বা মুখ্য শক্তি স্তর বা কোয়ান্টাম স্তর (Stationary orbit) বলে। কক্ষপথের সংখ্যা কে n দ্বারা প্রকাশ করা হয়। নিউক্লিয়াস থেকে ক্রমবর্ধমান দূরত্ব অনুসারে কক্ষপথ গুলিকে যথাক্রমে K (n = 1), L (n = 2), M (n = 3), N (n =4 ), O (n =5 ), P (n =6 ) এবং Q (n =7 ) কক্ষপথ বলা হয়। n-এর মান যত কম হবে ইলেকট্রনের কক্ষপথ ততই পরমাণু নিউক্লিয়াসের নিকটবর্তী হবে। এইসব কক্ষপথ গুলিতে আবর্তনকালে ইলেকট্রনগুলির শক্তি বিকিরণ করে না ফলে এই কক্ষপথ গুলির গড় শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট থাকে।

কোন একটি বিশেষ শক্তিস্তরে যেকোন সংখ্যক ইলেকট্রন থাকতে পারেনা। প্রত্যেকটি মুখ্য শক্তি স্তরে সর্বাধিক ইলেকট্রন সংখ্যা সর্বদা নির্দিষ্ট থাকে। ইলেকট্রনের এই নির্দিষ্ট সংখ্যাটি হল 2n2, যেখানে n= মুখ্য শক্তি স্তরের ক্রমিক সংখ্যা (1,2,3,4..)।

যে কোন ইলেকট্রনীয় কক্ষের সর্বোচ্চ ইলেকট্রন সংখ্যা 2n2 হলেও এর কয়েকটি সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন –

(i) n-এর মান 4-এর বেশি হলে ওই কক্ষপথের সর্বোচ্চ ইলেকট্রন সংখ্যা 32-এর বেশি হয় না।

(ii) যেকোনো পরমাণুতেই সবচেয়ে বাইরের কক্ষপথে 8-টির বেশি ইলেকট্রন থাকতে পারে না।

(iii) সবচেয়ে বাইরের পক্ষে ঠিক আগের কক্ষপথে 18-টির বেশি ইলেকট্রন থাকতে পারে না।

পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic Number) ও ভর সংখ্যা (Mass Number):

পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic Number):

কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যত সংখ্যক প্রোটন থাকে, সেই সংখ্যাকে ওই মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা পারমাণবিক সংখ্যা বলে- অর্থাৎ মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা পারমানবিক সংখ্যা (Z) = পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা। যেমন – অক্সিজেন পরমাণুতে 8-টি প্রোটন আছে। সুতরাং, অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক = 8

আবার পরমাণু তড়িৎ নিরপেক্ষ হওয়ায় পরমাণু নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যা এবং নিউক্লিয়াসের বাইরের মোট ইলেকট্রন সংখ্যা পরস্পর সমান হবে। অতএব বলা যায় যে, মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা পারমাণবিক সংখ্যা = পরমাণু নিউক্লিয়াসের প্রোটন সংখ্যা = পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরের মোট ইলেকট্রন সংখ্যা।

ভর সংখ্যা (Mass Number):

কোন মৌলের পরমাণু তে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টিকে ওই পরমাণুর ভর সংখ্যা বলে।

পরমাণুর ভর সংখ্যা (A)= প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা = পরমাণু ক্রমাঙ্ক + নিউট্রন সংখ্যা।

পরমাণু ক্রমাঙ্ক ও ভর সংখ্যা দিয়ে মৌলের প্রকাশ:

   AZX যেখানে X মৌলের চিহ্ন, Z পরমানু ক্রমাঙ্ক, A ভর সংখ্যা।

বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণু গঠনের দৃষ্টান্ত (Illustration of the structure of different atoms):

কোন মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক ভর সংখ্যা দেওয়া থাকলে পরমাণুর ইলেকট্রনীয় চিত্ররূপ কিভাবে পাওয়া যায় তা আমরা দেখবো–

  1. সাধারণ হাইড্রোজেন (Hydrogen – H):

সাধারণ হাইড্রোজেনের পরমাণু ক্রমাঙ্ক 1 এবং ভর সংখ্যা এক অর্থাৎ হাইড্রোজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের একটি প্রোটন এবং বাইরের কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন আছে সাধারণ হাইড্রোজেনের নিউক্লিয়াসের কোন নিউট্রন নেই এই হাইড্রোজেনের একমাত্র ইলেকট্রন টি নিউক্লিয়াস কে কেন্দ্র করে প্রথম কক্ষপথে (K- কক্ষপথে) আবর্তিত হয়।

  1. কার্বন (Carbon – C):

কার্বনের পরমাণু ক্রমাঙ্ক 6 এবং ভর সংখ্যা 12। অর্থাৎ কার্বন পরমাণু নিউক্লিয়াসের 6-টি প্রোটন 6-টি ইলেকট্রন এবং (12-6) বা 6-টি নিউট্রন আছে। পরমাণু নিউক্লিয়াসের বাইরের K- কক্ষপথে 2-টি এবং L- কক্ষপথে 4-টি ইলেকট্রন ঘূর্ণায়মান অবস্থায় থেকে পরম কার্বন পরমাণু গঠন করেছে।

  1. সোডিয়াম (Sodium – Na):

সোডিয়াম এর পরমাণু ক্রমাঙ্ক 11 এবং ভর সংখ্যা 23 । অর্থাৎ সোডিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসে 11-টি প্রোটন, 11-টি ইলেকট্রন এবং (23-11) বা 12-টি নিউট্রন আছে। নিউক্লিয়াসের বাইরে K-কক্ষপথে 2-টি, L-কক্ষপথে 8-টি এবং M-কক্ষপথে 1-টি ইলেকট্রন ঘূর্ণায়মান অবস্থায় থেকে সোডিয়াম পরমাণু গঠন করেছে।

  1. ক্লোরিন (Chlorine – Cl):

ক্লোরিনের পরমাণু ক্রমাঙ্ক 17 এবং ভর সংখ্যা 35 ।

অর্থাৎ ক্লোরিন পরমাণুতে 17-টি প্রোটন, 17-টি ইলেকট্রন এবং (35 – 17) বা18-টি নিউট্রন আছে। নিউক্লিয়াসের বাইরে K-কক্ষপথে 2-টি, L-কক্ষপথে 8-টি এবং M-কক্ষপথে 7-টি ইলেকট্রন ঘূর্ণায়মান অবস্থায় থেকে ক্লোরিন পরমাণু গঠন করেছে।

About Victor

Discovering my self...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *