Atomic Structure of Matter (পদার্থের পারমাণবিক গঠন) – III

নিষ্ক্রিয় মৌল (Inactive Elements or Inert Gas):

যেসব মৌলের পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষপথে 8-টি ইলেকট্রন থাকে তাদের নিষ্ক্রিয় মৌল বলে। ওইসব পরমাণু রাসায়নিক বিক্রিয়ার দিক থেকে খুবই নিষ্ক্রিয়। নিয়ন (Ne), আর্গন (Ar), ক্রিপটন (Kr), জেনন (Xe), রেডন (Rn) প্রভৃতি গ্যাস গুলি এই শ্রেণীভুক্ত। এছাড়াও নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়াম (He)-এর একটিমাত্র ইলেকট্রনীয় কক্ষপথে 2-টি ইলেকট্রন থাকে।

পারমাণবিক সংখ্যাকে মৌলের মূলগত ধর্ম বলা হয় কেন?

পারমাণবিক সংখ্যা মৌলের স্বকীয় ধর্ম প্রকাশ করে। কারণ, যে কোন মৌলের মূল রাসায়নিক ধর্ম মৌলটির পারমাণবিক সংখ্যার উপর নির্ভরশীল। মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা পরিবর্তিত হলে মৌলটির ধর্মও পরিবর্তিত হয়, ফলে ওই পরমাণু নতুন ধর্ম বিশিষ্ট অপর কোন মৌলের পরমাণুতে রূপান্তরিত হয়। প্রত্যেক মৌলের একটি নির্দিষ্ট পারমানবিক সংখ্যা আছে এবং কোন দুটি মৌলের পরমাণু সংখ্যা কখনোই সমান হয় না। অর্থাৎ- নির্দিষ্ট মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকায় মৌলটির রাসায়নিক ধর্মও নির্দিষ্ট থাকে। অতএব, পারমাণবিক সংখ্যায় মৌলের মূলগত ধর্ম।

আইসোটোপ (Isotope): একই মৌলের বিভিন্ন পরমাণু, যাদের পারমাণবিক সংখ্যা (অর্থাৎ প্রোটন সংখ্যা) একই, কিন্তু নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকার জন্য ভর সংখ্যা আলাদা হয়, তাদের আইসোটোপ বলে।

হাইড্রোজেনের আইসোটোপ (Isotopes of Hydrogen):

ক্লোরিনের আইসোটোপ (Isotopes of Chlorine):

কার্বনের আইসোটোপ (Isotopes of Carbon):

অক্সিজেনের আইসোটোপ (Isotopes of Oxygen):

ইউরেনিয়ামের আইসোটোপ (Isotopes of Uranium):

আইসোটোপ আবিষ্কার হওয়ার পর জানা যায় মৌলের রাসায়নিক ধর্ম মৌলের পারমাণবিক সংখ্যার উপর নির্ভরশীল পারমাণবিক ভরের উপর নয়।

আইসোটোপের ব্যবহার (Uses of Isotope):

(1) কোবাল্টের (Co) তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ক্যান্সার রোগ নির্ণয় ব্যবহৃত হয়।

(2) আয়োডিনের (I) তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ থাইরয়েড গ্রন্থি সংক্রান্ত রোগ এবং গলার ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

(3) বর্তমানে কৃষি, চিকিৎসা, পৃথিবীর বয়স সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক তথ্য জানতে আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়।

আইসোবার (Isobar):

যেসব পরমাণুর ভর সংখ্যা পরস্পর সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা অর্থাৎ প্রোটন সংখ্যা সমান নয় তাদের আইসোবার বলে।

আইসোটোন (Isotone):

যেসব পরমাণুর কেন্দ্রে নিউট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা আলাদা তাদের আইসোটোন বলে।

পরমাণু (Atom) এবং আয়ন (Ion):

কোন মৌলের পরমাণু বিশেষ অবস্থায় সর্ববহিঃস্থ  কক্ষপথ থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন বর্জন করতে পারে অথবা সর্ববহিস্ত সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথে এক একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে। উভয় ক্ষেত্রেই পরমাণুটির তড়িৎগ্রস্থ হয়। এই তড়িৎগ্রস্থ পরমাণুকেই আয়ন বলে। পরমাণু এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জনের ফলে নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে ফলে আয়ন সুস্থিত হয়।

 

সংজ্ঞা (Definition): পজিটিভ বা নেগেটিভ তড়িৎগ্রস্ত পরমাণুকে আয়ন বলে।

আয়ন দুই প্রকার যথা:

(i) ক্যাটায়ন (Cation) বা পজিটিভ তড়িৎগ্রস্ত আয়ন  এবং (ii) অ্যানায়ন (Anion) বা নেগেটিভ তড়িৎগ্রস্ত আয়ন।

(i) ক্যাটায়ন (Cation): পজিটিভ তড়িৎগ্রস্থ পরমানুকে ক্যাটায়ন বলে।

যখন কোন পরমাণু তার সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথ থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে তখন পরমাণুটির মোট ইলেকট্রন সংখ্যা নিউক্লিয়াসের প্রোটন সংখ্যা থেকে কম হয়। ফলে পরমাণুটি পজিটিভ তড়িৎগ্রস্ত হয়ে পড়ে অর্থাৎ পরমাণুটি ক্যাটায়নের পরিণত হয়।

Na – e = Na+ (সোডিয়াম আয়ন), Ca – 2e  = Ca+2 (ক্যালসিয়াম আয়ন)।

 

(i) অ্যানায়ন (Anion): নেগেটিভ তড়িৎগ্রস্থ পরমানুকে ক্যাটায়ন বলে।

কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথে এক বা একাধিক ইলেকট্রন যুক্ত হলে নিউক্লিয়াসের বাইরের কক্ষপথ গুলির মোট ইলেকট্রন সংখ্যা নিউক্লিয়াসের প্রোটন সংখ্যা থেকে বেশি হয়। ফলে পরমানুটি নেগেটিভ তড়িৎগ্রস্থ কণায় পরিণত হয়ে পড়ে। অর্থাৎ পরমাণুটি অ্যানায়নে পরিণত হয়।

O – 2e = O-2 (অক্সাইড আয়ন), Cl – e = Cl (ক্লোরাইড আয়ন), N +3e = N-3 (নাইট্রাইড আয়ন)।

 

মূলক (Radical): আধানযুক্ত একাধিক ভিন্ন মৌলের পরমাণুপুঞ্জ যখন মৌলের পরমাণুর মতো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তখন তাকে মূলক বলে।

পজিটিভ বা নেগেটিভ তড়িৎগ্রস্ত মূলকগুলিও আয়ন। যেমন – অ্যামোনিয়াম (NH4+), হাইড্রোক্সিল (OH), নাইট্রেট (NO3), সালফেট (SO4-2) ইত্যাদি।

 

পরমাণু ও আয়নের পার্থক্যঃ      

পরমাণু

আয়ন

1. পরমাণু তড়িৎ নিরপেক্ষ কণা।

1. আয়ন ধনাত্মক বা ঋণাত্মক তরিতগ্রস্ত কণা।

2. পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটন সংখ্যা সমান থাকে।

2. আয়নে ইলেকট্রন ও প্রোটন সংখ্যা সমান থাকে না।

3. আয়নের ছেয়ে পরমাণু কম সুস্থিত।

3. পরমাণুর চেয়ে আয়ন বেশি সুস্থিত।

4. জলীয়ও দ্রবণে পরমাণু স্বাধীনভাবে থাকতে পারে, আবার নাও থাকতে পারে।

4. জলীয় দ্রবণে আয়ন স্বাধীনভাবে থাকতে পারে।

 

পরমাণুর চেয়ে আয়ন বেশি সুস্থিত কারণ – পরমাণু এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন করে নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে, ফলে আয়ন বেশি সুস্থিত হয়।

About Victor

Discovering my self...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *