Force and Motion (বল ও গতি) – II

গতি সংক্রান্ত কয়েকটি রাশি (Some quantity realating to motion):

  1. সরণ (Displacement):

কোন গতিশীল বস্তু নির্দিষ্ট দিকে স্থান পরিবর্তনকে বস্তুটির সরণ বলেবস্তুটির প্রথম শেষ অবস্থান বিন্দুর মধ্যবর্তী সরলরৈখিক দূরত্বই হল ওই বস্তুর সরণের পরিমাপ

সরণের উদাহরণ: মনে কর একটি গতিশীল বস্তু A বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে  Path1 বা Path2 বা Path3 পথে চলে B বিন্দুতে এসে থেমেছে। বস্তু কণাটি B বিন্দুতে পৌঁছাতে যে পথই অনুসরণ করুক না কেন, তার প্রথম ও শেষ অবস্থান বিন্দুর মধ্যবর্তী সরলরৈখিক দূরত্ব AB –ই (এখানে Path 2) হবে গতিশীল বস্তুটির সরণের পরিমাপ।

সরণের মান অভিমুখ দুই-ই আছে তাই সরণ একটি ভেক্টর রাশি। সরণকে দৈর্ঘ্যের এককে প্রকাশ করা হয়।

সরণের একক: SI পদ্ধতিতে সরণের একক হলো মিটার (m)। CGS পদ্ধতিতে সরণের একক সেন্টিমিটার (cm)।

সরণ ও অতিক্রান্ত দূরত্ব: কোন একটি বস্তু নির্দিষ্ট স্থান থেকে যাত্রা শুরু করে শেষ অবস্থানে পৌঁছাতে মোট যে পথ অতিক্রম করে, তাকে ওই বস্তুটির
দ্বারা অতিক্রান্ত
দূরত্ব
বলা হয় বস্তুটির
দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব এবং বস্তু
কণার সরণ পরস্পর সমান
নাও হতে পারে

এক ব্যক্তি A বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে প্রথমে B বিন্দুতে এবং পরে B বিন্দু থেকে C বিন্দুতে পৌঁছালো। ধরা যাক, AB = 4 মিটার এবং BC = 3 মিটার; তাহলে বস্তুটির দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব = AB + BC = (4 + 3) মিটার = 7 মিটার।

কিন্তু ওই বস্তুকণার সরণ = AC = AC2 = (AB2 + BC2) = (42+ 32) = 25 মিটার = 5 মিটার ।

 

কোন বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্ব বা সরণের মান শূন্য হতে পারে কি?

কোন বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্ব কখনো শূন্য হতে পারে না কিন্তু বস্তুর সরণ শূন্য হতে পারে। মনে কর এক ব্যক্তি সরলরৈখিক পথে A বিন্দু থেকে B বিন্দুতে, B বিন্দু থেকে C বিন্দুতে, C বিন্দু থেকে D বিন্দুতে  গিয়ে আবার D বিন্দু থেকে A বিন্দুতে ফিরে এলো। এখানে ব্যক্তির প্রথম ও শেষ অবস্থান একই বিন্দু হওয়ায় ওই ব্যক্তির সরণ শূন্য হবে। কিন্তু ব্যক্তি দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব = AB+ BC + CD + DA  = (3+5+3+5) m = 16 m

  1. দ্রুতি (Speed):

কোন গতিশীল বস্তু সরল বা বক্র পথে একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ওই বস্তুর দ্রুতি বলে

দ্রুতির মান আছে কিন্তু কোন অভিমুখ নেই তাই দুটি একটি স্কেলার রাশি।

দ্রুতির পরিমাপ: বস্তুর দ্রূতি = অতিক্রান্ত দূরত্ব ÷ সময়

কোন বস্তু যদি t সময়ে s দূরত্ব অতিক্রম করে তবে সেক্ষেত্রে বস্তুর দ্রুতি = s/t.

দ্রুতির একক: SI পদ্ধতিতে দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড (m/s) । CGS পদ্ধতিতে দ্রুতির একক সেন্টিমিটার/সেকেন্ড (cm/s) ।

মনে কর একটি ট্রেন তিন ঘন্টায় 180 কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে তবে ট্রেনটির দ্রুতি =180÷3 কিমি/ঘণ্টা = 60 কিমি/ঘণ্টা।

দ্রুতির প্রকারভেদ: দ্রুতি দুই প্রকার। যথা – (I) সমদ্রুতি ও (II) অসমদ্রুতি।

(I) সমদ্রুতি (Uniform speed): যদি কোন বস্তুর সমান সময়ের ব্যবধানে সর্বদা সমান দূরত্ব অতিক্রম করে তখন সেই বস্তুটির দ্রুতিকে সম দ্রুতি বলে।

উদাহরণ বৃত্তাকার পথে ঘূর্ণায়মান কোন বস্তু যদি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের চাপকে অতিক্রম করে চলতে থাকে তবে বস্তুটিকে সম দ্রুতি সম্পন্ন বলা হয়।

(II) অসমদ্রুতি (Non uniform speed): যদি কোন বস্তু সমান সময়ের অবকাশে বিভিন্ন দূরত্ব অতিক্রম করে তবে বস্তুটির দ্রুতিকে অসমদ্রুতি বলে।

অসম দ্রুতির ক্ষেত্রে গড় দ্রুতির নির্ণয় করার প্রয়োজন হয়। অসমদ্রুতি সম্পন্ন কোন বস্তু দ্বারা অতিক্রান্ত মোট দূরত্বকে মোট সময় দ্বারা ভাগ করলে বস্তুটির গড়দ্রুতি (Average speed) পাওয়া যায়।

বস্তুর গড়দ্রুতি = মোট অতিক্রান্ত দূরত্ব ÷ মোট সময়।

মনে করো কোন বস্তু প্রথম 2 ঘন্টায় 5 কিমি এবং পরের 3 ঘন্টায় 10 কিমি দূরত্ব অতিক্রম করল।

এক্ষেত্রে বস্তুটির গড়দ্রুতি = 15 ÷ 5 কিমি/ঘণ্টা = 3 কিমি/ঘণ্টা।

  1. বেগ (Velocity):

কোন গতিশীল বস্তুর সরণের পরিবর্তনের হার কে বেগ বলেঅর্থাৎ একক সময়ে কোন বস্তু নির্দিষ্ট দিকে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ওই বস্তুর বেগ বলে

বেগের পরিমাপঃ বস্তুর গতিবেগ = বস্তুর সরণ ÷ সময়

যদি t সময় কোন বস্তুর সরণ s  এবং বেগ v হলে, v = s/t.

বেগের একক: SI পদ্ধতিতে বেগের একক মিটার/সেকেন্ড (m/s) এবং CGS পদ্ধতিতে বেগের এক সেন্টিমিটার/সেকেন্ড (cm/s)।

বেগের প্রকারভেদ: বস্তুর বেগ দুই প্রকার। যথা – (I) সমবেগ ও (II) অসমবেগ।

(I) সমবেগ (Uniform velocity): কোন বস্তুর বেগের  মান ও দিক সব সময় অপরিবর্তিত থাকলে বস্তুটির বেগকে সমবেগ বলে। যেমন কোন বস্তু 10 মিটার/সেকেন্ড বেগে সরলরেখা বরাবর চলছে। বস্তুর এই বেগকে আমরা সমবেগ বলবো।

(II) অসমবেগ (Non uniform velocity): যদি কোন বস্তুর বেগের মান কিংবা অভিমুখ সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়, তবে বস্তুটির বেগকে অসমবেগ বলে। যেমন – স্থির অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করে কোন বস্তু একই দিকে নির্দিষ্ট ত্বরণে চলে তবে সময়ের সাপেক্ষে ওই বস্তুর বেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে ফলে বস্তুটি অসমবেগে চলতে থাকে।

গড় বেগ (Average velocity): বস্তুর বেগ অসম হলে গর্বের নির্ণয় করতে হয় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বস্তুর মোট যে স্মরণ হয় তা ওই সময়ের ব্যবধান নিয়ে ভাগ করলে বস্তুর গড়বেগ পাওয়া যায়। ধরা যাক, একটি গাড়ি প্রথম 1 ঘন্টায় 30 কিলোমিটার, পরের 2 ঘন্টায় 50 কিলোমিটার ও শেষ 1 ঘন্টায় 20 কিলোমিটার সোজা গেল।  গাড়িটির গড় বেগ = (100 ÷ 4) কিমি/ঘণ্টা = 25 কিমি/ঘণ্টা।

সমদ্রুতি সম্পন্ন কোন বস্তু সমবেগ সম্পন্ন নাও হতে পারে – যদি কোন বস্তু আঁকাবাঁকা পথে সমান সময়ের ব্যবধানে একই দূরত্ব অতিক্রম করে চলতে থাকে তবে বলা হয় যে, বস্তুটি সমদ্রুতিতে চলছে। আঁকা বাঁকা পথে চলার সময় বস্তুটির গতির অভিমুখের পরিবর্তন ঘটে। ফলে ওই বস্তুটিকে সমবেগ সম্পন্ন বলা যায় না কারণ বেগের একটা নির্দিষ্ট অভিমুখ থাকে।

দ্রুতি ও বেগের পার্থক্য:

দ্রুতি

বেগ

কোনো গতিশীল বস্তু একক
সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে দ্রুতি বলে।

একক সময়ে কোনো গতিশীল বস্তুর
সরণকে বস্তুটির বেগ বলে।

দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি।

বেগ একটি ভেক্টর রাশি।

সচল বস্তুর গড় দ্রুতি শূন্য
হতে পারে না।

সচল বস্তুর গড় বেগ শূন্য
হতে পারে।

সমদ্রুতি সম্পন্ন বস্তু
সমবেগ সম্পন্ন নাও হতে পারে।

সমবেগ সম্পন্ন বস্ত সমদ্রুতি
সম্পন্ন হবেই।

বস্তুর গড় দ্রুতি বস্তুর
গড় দ্রুতির সমান অথবা বেশি হয়।

বস্তুর গড় বেগ বস্তুর গড়
বেগের সমান অথবা কম হয়।

  1. ত্বরণ (Aaceleration):

যদি কোন বস্তু ক্রমবর্ধমান বেগ নিয়ে চলে, তবে বস্তুটির বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলে

ত্বরণের  পরিমাপঃ ত্বরণ = বেগের বৃদ্ধি ÷ অতিক্রান্ত সময়

ত্বরণের মান অভিমুখ দুই-ই আছে তাই ত্বরণ একটি ভেক্টর রাশি।

ত্বরণের একক: SI পদ্ধতিতে ত্বরণের একক মিটার/সেকেন্ড2 (m/s2)এবং CGS পদ্ধতিতে ত্বরণের একক সেমি/সেকেন্ড2 (cm/s2)।

u প্রাথমিক বেগসম্পন্ন কোন বস্তুর t সময় পরে বেগ বৃদ্ধি পেয়ে অন্তিম বেগ v হলে,

বস্তুর ত্বরণ (a) = বস্তুর বেগ বৃদ্ধি ÷ অতিক্রান্ত সময়  = (বস্তুর অন্তিম বেগ – বস্তুর প্রাথমিক বেগ) ÷ অতিক্রান্ত সময়

 a = (v – u) ÷ t

মনে কর, একটি বস্তু প্রাথমিক বেগ 15 সেমি/সেকেন্ড এবং বস্তুটি সমত্বরণে চলছে। যদি 4 সেকেন্ড পরে বস্তুটির বেগ 23 সেমি/সেকেন্ড হলে, বস্তুটির ত্বরণ = (23 – 15) ÷ 4 সেমি/সেকেন্ড2 = 2 সেমি/সেকেন্ড2

  1. মন্দন (Retardation):

যদি কোন বস্তু ক্রমহ্রাসমান বেগ নিয়ে চলে, তবে বস্তুটির বেগ হ্রাসের হারকে মন্দন বলেমন্দন ত্বরণ এর বিপরীত বলে মন্দনকে ঋণাত্মক ত্বরণও বলা হয় ত্বরণ ও মন্দনের একক পরস্পর এক। মন্দন একটি ভেক্টর রাশি।

নির্দিষ্ট মন্দনে গতিশীল কোন বস্তুর প্রারম্ভিক বেগ u এবং t সময় পরে বেগ কমে বস্তুটি অন্তিম বেগ v হলে,

বস্তুটির মন্দন = (বস্তুর প্রারম্ভিক বেগ – বস্তুর অন্তিম বেগ) ÷ অতিক্রান্ত সময়।

a = (u – v) ÷ t

মনে কর, 20 মিটার/সেকেন্ড বেগে যাত্রা শুরু করার 2 সেকেন্ড পরে কোন বস্তুর বেগ 14 মিটার/সেকেন্ড হল।

বস্তুটির মন্দন = (20 – 14) ÷ 2 মিটার/সেকেন্ড2 = 3 মিটার/সেকেন্ড2

ত্বরণ বা মন্দন এর এককে প্রতি সেকেন্ড কথাটি দুবার ব্যবহার করা হয় কেন?

ত্বরণ বা মন্দনে বেগের একক প্রকাশ করতে সময়ের একককে একবার ব্যবহার করা হয় এবং বেগের পরিবর্তনের হার বোঝাতে সময়ের এককে পুনরায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে ত্বরণের একক প্রকাশ করতে প্রতি সেকেন্ড কথাটিকে দুবার ব্যবহার করতে হয়।

ত্বরণ = বেগের পরিবর্তন / সময়

ত্বরণের একক = বেগের একক  / সময়ের একক

বেগের একক  = সরণেরএকক / সময়ের একক

সুতরাং ত্বরণের একক = (সরণেরএকক / সময়ের একক) / সময়ের একক

= সরণেরএকক / সময়ের একক2

 

সমত্বরণ অসমত্বরণ: যদি কোন বস্তু ক্রমবর্ধমান বেগ নিয়ে চলে এবং বস্তুর বেগের পরিবর্তন যদি সমান সময়ের ব্যবধানে সর্বদা সমান হয়, তবে ওই বস্তুর ত্বরণকে সমত্বরণ বলে। যেমন – উঁচু কোন স্থান থেকে অবাধে ভূপৃষ্ঠে পতনশীল কোন বস্তুর উপর অভিকর্ষজ ত্বরণ ক্রিয়া করে। কোন নির্দিষ্ট স্থানে অভিকর্ষ ত্বরণের মান ধ্রুবক হওয়ায় বস্তুটি সমত্বরণে নিচে নামতে থাকে।

কিন্তু যদি বস্তুটির বেগের পরিবর্তন সমান সময়ের ব্যবধানে সর্বদা সমান না হয়, তবে বস্তুটির ত্বরণকে অসমত্বরণ বলে। যেমন – দোলনাকে দুলিয়ে ছেড়ে দিলে তার ত্বরণ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হয়।

কোন বস্তুর গতিবেগ আছে কিন্তু ত্বরণ নেই –এটা কি সম্ভব?

যদি কোন বস্তু একই বেগে অর্থাৎ সমবেগে চলতে থাকে তবে বস্তুটির গতিবেগ থাকবে কিন্তু কোন ত্বরণ থাকবে না।

কোন বস্তুর ত্বরণ থাকা কি সম্ভব যখন বস্তুটির গতিবেগ শূন্য?

কোন বস্তুর গতিবেগ শূন্য হলেও তার ত্বরণ থাকা সম্ভব। কোন বস্তুকে নির্দিষ্ট বেগে উপরের দিকে ছুড়ে দিলে বস্তুটির গতিবেগ ক্রমশ কমতে কমতে একসময় শূন্য হয়ে যায়। কিন্তু ওই অবস্থায় বস্তুটির উপর অভিকর্ষজ ত্বরণ ক্রিয়াশীল থাকে ফলে বস্তুটির নিচের দিকে নামতে শুরু করে ।

About Victor

Discovering my self...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *