নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রের আলোচনা (Newton’s second law of motion):
দ্বিতীয় গতিসূত্র : কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের
হার বস্তুটির উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে ভরবেগের পরিবর্তনও
সেই দিকে ঘটে ।
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে যে বিষয়গুলো আমরা জানতে পারি তা হল (1) ভরবেগ, (2) বলের পরিমাপ এবং (3) বলের একক ।
- ভরবেগ (Momentum):
বল প্রয়োগ করে বস্তুকে গতিশীল করা হয় । কিন্তু দুটি আলাদা ভরের বস্তুর উপর একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে বস্তু দুটিতে সমবেগ উৎপন্ন করা যায় না । বস্তু দুটিতে সমবেগ সৃষ্টি করতে অপেক্ষাকৃত ভারী বস্তুটিতে বেশি বল প্রয়োগ করতে হয় । সমভরের দুটি বস্তুতে যথাক্রমে ঘণ্টায় 15 কিমি এবং 45 কিমি বেগ উৎপন্ন করতে দ্বিতীয় বস্তুটিতে প্রথমটির তিনগুণ বল প্রয়োগ করতে হয় । এ থেকে বলা যায় যে, কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে বস্তুর বেগের যে পরিবর্তন ঘটে, সেই পরিবর্তন বস্তুটির ভরের উপর নির্ভরশীল।
ভরবেগের সংজ্ঞা: ভর ও বেগের সমন্বয়ে কোন গতিশীল বস্তুতে যে ধর্মের উৎপত্তি হয়, সেই ধর্মকে বস্তুটির ভরবেগ বলে । ভরবেগ বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলের সমান ।
কোন বস্তুর ভর m এবং বেগ v হলে, বস্তুটির ভরবেগ (p) = বস্তুর ভর x বস্তুর বেগ
∴ p = mv
ভর একটি স্কেলার রাশি, কিন্তু বেগ একটি ভেক্টর রাশি । তাই এদের গুণফল অর্থাৎ ভরবেগ একটি ভেক্টর রাশি । বেগের দিকই হল ভরবেগের দিক ।
ভরবেগের একক:
SI অতীতে ভরবেগের একক হল কিলোগ্রাম-মিটার/সেকেন্ড2 (kg m/s2) ।
CGS পদ্ধতিতে ভরবেগেরে কখনো গ্রাম-সেমি/সেকেন্ড2 (gm cm/s2) ।
ভরবেগের তাৎপর্য: ভর যত বেশি হয় বস্তুর ভর ভরবেগ তত বাড়ে । মনে কর একটি বস্তুর ভর m এবং বেগ v; আরেকটি বস্তুর ভর 2m কিন্তু বেগ একই অর্থাৎ v । প্রথম বস্তুর ভরবেগ = mv এবং দ্বিতীয় বস্তুর ভরবেগ = 2mv । দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে আমরা জানি, প্রযুক্ত বল বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হারের সমানুপাতিক হয় । অতএব দ্বিতীয় বস্তুটিকে একই সময়ের মধ্যে থামাতে গেলে প্রথম বস্তুর থেকে দ্বিগুণ বল প্রয়োগ করতে হয় । উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটি মালভর্তি লরি যদি একটি মারুতি গাড়ির সমান বেগে চলে তাহলে অনেক ভর বেশি বলে লরিটির ভরবেগ বহুগুণ বেশি হয় । এজন্য একই সময়ের মধ্যে দুটি গাড়িকে থামাতে চাইলে লরিটিকে থামাতে অনেক বেশি বল প্রয়োগ করতে হয় ।
আবার ভর স্থির রেখে বেগ বাড়ালে বস্তুর ভরবেগ বাড়ে । একই বস্তু বেশি বেগে চললে তার ভরবেগ বেশি হয় । বেগ যত গুণ বেশি হয় বস্তুটিকে একই সময়ে থামাতে আগের থেকে তত গুণ বেশি বল প্রয়োগ করতে হয় । যেমন একটি গাড়ি যদি দ্বিগুণ বেগে চলে তাহলে গাড়িটিকে থামাতে আগের থেকে দ্বিগুণ বল প্রয়োগ করতে হয় । যেমন রাইফেলের গুলির ভর খুব কম কিন্তু বেগ অত্যন্ত বেশি; ফলে ভরবেগ খুব বেশি হওয়ায় রাইফেলের গুলির আঘাত প্রচন্ড হয় ।
- বলের পরিমাপ (Measurement of force):
মনে করি, m ভরের একটি বস্তু সরলরেখায় u বেগে চলছে । এখন t সময় ধরে বস্তুটির উপর কোন স্থির বল F প্রয়োগ করার ফলে বস্তুটিতে a ত্বরণ উৎপন্ন হল এবং বস্তুর বেগ বেড়ে v হল ।
∴ বস্তুটির প্রাথমিক ভরবেগ = mu
t সময় পরে বস্তুর ভরবেগ = mv
অর্থাৎ, t সময়ে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন = mv – mu
বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার = (mv – mu)/t = m(v – u)/t = ma [∵ ত্বরণ a=(v – u)/t ]
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র অনুসারে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক । সুতরাং
F α ma
∴ F = K.mf
এখানে K একটি সমানুপাতিক ধ্রুবক । K -এর মান একক বলের সংজ্ঞা থেকে পাওয়া যায় ।
একক বল (Unit force): একক ভরের বস্তুর উপর যে বল ক্রিয়া করে একক ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে একক বল বলে । অর্থাৎ, যখন m = 1 এবং a = 1 তখন F = 1 হয় । তাহলে উপরের সমীকরণ থেকে আমরা পাই,
1 = K.1.1
বা, K = 1
উপরের সমীকরণে K = 1 বসিয়ে,
∴ F = ma
অর্থাৎ বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল = বস্তুর ভর x বস্তুর ত্বরণ ।
F = ma সমীকরণ দিয়ে আমরা বলের পরিমাপ করতে পারি ।
আমরা জানি, ভর একটি স্কেলার রাশি এবং ত্বরণ একটি ভেক্টর রাশি । অতএব এই দুই রাশির গুণফল বলে বল একটি ভেক্টর রাশি । ত্বরণ ও বলের অভিমুখ একই হয় ।
F = ma সমীকরণ থেকে নিচের বিষয়গুলি জানা যায়-
(i) বস্তুর উপর বল ক্রিয়া করলে বস্তুটি ত্বরণ নিয়ে চলতে থাকে । গতিশীল বস্তুর গতির বিপরীত দিকে বল প্রয়োগ করলে বস্তুটি মন্দন নিয়ে চলতে থাকে । অর্থাৎ বস্তু ত্বরণ বা মন্দন নিয়ে চললে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে বস্তুটির উপর বল ক্রিয়া করছে ।
(ii) বস্তুটি ত্বরণ বা মন্দন প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক হয় ।
(iii) বলের অভিমুখীই হল ত্বরণ বা মন্দনের অভিমুখ ।
(iv) বলের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে বস্তুটির ত্বরণ বা মন্দন থাকে না । তখন বস্তুটি শেষ যে বেগ লাভ করেছিল সেই বেগে সরলরেখা বরাবর চলতে থাকে ।
- বলের একক (Units of force):
বলের একক দুই প্রকার (I) পরম বা চরম একক ও (II) অভিকর্ষীয় একক ।
(I) বলের পরম বা চরম একক (Absolute units of force):
একক ভরের বস্তুর উপর যে বল ক্রিয়া করে একক ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে বলের পরম একক বলে ।
SI পদ্ধতিতে বলের পরম একক নিউটন (Newton বা N) । এক কিলোগ্রাম ভরের বস্তুর উপর যে বল ক্রিয়া করে বস্তুটিতে এক মিটার/সেকেন্ড2 ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে এক নিউটন বলে ।
CGS পদ্ধতিতে বলের পরম একক ডাইন (Dyne) । এক গ্রাম ভরের বস্তুর উপর যে বল ক্রিয়া করে বস্তুটিতে এক সেমি/সেকেন্ড2 ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে এক ডাইন বলে ।
নিউটন ও ডাইনের মধ্যে সম্পর্ক:
1 Newton = 1kg x 1m/s2 = 1000 gm x 100 cm/s2 = 105 gm cm/s2 = 105 dyne
(II) বলের অভিকর্ষীয় একক (Gravitational units of force):
একক ভরের কোনো বস্তুকে যে বল দিয়ে পৃথিবী নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে, তাকে বলের অভিকর্ষীয় একক বলে ।
SI পদ্ধতিতে বলের অভিকর্ষীয় একক কিলোগ্রাম-ভার (kilogram weigt or kg wt) । এক কিলোগ্রাম ভরের কোনো বস্তুকে যে বল দিয়ে পৃথিবী নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে, সেই বলকে এক কিলোগ্রাম-ভার বলে ।(W = mg)
সুতরাং 1 কিলোগ্রাম-ভার = 1 কিলোগ্রাম x g মিটার/সেকেন্ড2 = g কিলোগ্রাম মিটার/সেকেন্ড2 = g নিউটন
SI পদ্ধতিতে g-এর মান = 9.81 মিটার/সেকেন্ড2 ।
∴ 1 কিলোগ্রাম-ভার = 9.81 নিউটন ।
CGS পদ্ধতিতে বলের অভিকর্ষীয় একক গ্রাম-ভার (gram weigt or gm wt) । এক গ্রাম ভরের কোনো বস্তুকে পৃথিবী নিজের কেন্দ্রের দিকে যে বলে আকর্ষণ করে, সেই বলকে এক গ্রাম-ভার বলে ।(W = mg)
সুতরাং 1 গ্রাম-ভার = 1 গ্রাম x g সেন্টিমিটার/সেকেন্ড2 = g গ্রাম সেন্টিমিটার/সেকেন্ড2 = g ডাইন
CGS পদ্ধতিতে g-এর মান = 981 সেন্টিমিটার/সেকেন্ড2 ।
∴ 1 গ্রাম-ভার = 981 ডাইন ।
নিউটন বা ডাইনকে বলের পরম একক বলা হয় কেন ?
পৃথিবী বা মহাবিশ্বের যে কোন জায়গায় বলের পরিমাপ নিউটন বা ডাইন একক অনুযায়ী করলে সব জায়গাতেই একক বলের মান একই থাকবে । এই জন্যই এই দুটি একককে পরম একক বলা হয় ।
অভিকর্ষীয় একককে পরম একক বলা হয় না কেন ?
বলের অভিকর্ষ এককের মান অভিকর্ষজ ত্বরণের মানের উপর নির্ভর করে । অভিকর্ষজ ত্বরণের মান পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয় । অন্যান্য গ্রহ নক্ষত্রেও এই ত্বরণের মান পৃথিবী থেকে আলাদা হয়। এজন্য বলের অভিকর্ষীয় এককের মান স্থানের পরিবর্তনে পরিবর্তিত হয় তাই এই একককে পরম বলা হয় না ।
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে প্রথম গতিসূত্রের প্রতিষ্ঠা:
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে আমরা জানি, m ভরের কোন বস্তুর উপর F বল ক্রিয়া করলে যদি বস্তুর ত্বরণ a হয় তবে-
F = ma
বস্তুর প্রাথমিক বেগ u এবং t সময় পরে বেগ v হলে, a = (v – u)/t
∴ F = m(v – u)/t
বাইরে থেকে বস্তুর উপর কোন বল ক্রিয়া না করলে F = 0 হয় । যেহেতু বস্তুর ভর (m) ও সময় (t) শূন্য হতে পারে না তাই
F = 0 হলে v – u = 0
অর্থাৎ, হয় (i) u = 0 ও v = 0 অথবা (ii) v = u হবে ।
(i) u = 0 ও v = 0 হওয়ার অর্থ হলো কোনো বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকে ।
(ii) v = u হলে বোঝা যায় কোন বল প্রযুক্ত না হলে বস্তুটি সমবেগে সরলরেখা ধরে চলতে থাকে । এটিই নিউটনের প্রথম গতিসূত্র ।
বস্তুর ভরই বস্তুর জাড্যের পরিমাপ পরিমাণ:
নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে আমরা পাই F = ma, যেখানে F = প্রযুক্ত বল, m = বস্তুর ভর এবং a = বস্তুর ত্বরণ ।
a = F/m
এখন F যদি স্থির থাকে অর্থাৎ একই বল বিভিন্ন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাহলে F ধ্রুবক ।
তখন a α 1/m
অর্থাৎ, একই বল দুটি বস্তুর উপর ক্রিয়া করলে যে বস্তুর ভর বেশি তার ত্বরণ কম হবে । অন্যভাবে বলা যায় যে, একই তরন সৃষ্টি করতে অথবা একই গতিবেগ পরিবর্তন করতে কম ভরের বস্তুর তুলনায় বেশি ভরের বস্তুতে বেশি বল প্রয়োজন হয় । সুতরাং, বলা যায় বস্তুর ভরই জাড্যের পরিমাপ ।
Hi, don’t troll, please!
MEGA onion мега площадка – это самый крупный анонимный магазин в СНГ, который работает на просторах сети. Площадка обеспечивает каждому пользователю 100% анонимность и безопасность. К тому же гарантирует защиту ваших денег, простую и быструю оплату товаров и услуг в разной валюте включая криптовалюту, а также обход всех блокировок. Для посещения вам не потребуется соединение Tor или VPN. Достаточно перейти на сайт МЕГА, по сслыке: https://xn--mg-8ma3631a.com . Пройти простую регистрацию и попасть на сайт, который откроет для вас массу возможностей. Все продавцы проверяются администрацией MEGA, официальный сайт гарантирует безопасность своим пользователям. Потому, если вам требуется купить что-либо, перейти на мега официальный сайт будет правильным решением.
! https://xn--mgasb-n51b.com !
kiki99811
мега сайт