নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের আলোচনা:
প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে ।
নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া প্রকৃতপক্ষে দুটি বল মাত্র । একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে তখন দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুর উপর একটি সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে । প্রথম বস্তু দ্বিতীয় বস্তুর উপর যে বল প্রয়োগ করে তাকে যদি ক্রিয়া (Action) বলা হয়, তবে দ্বিতীয় বস্তু কর্তৃক প্রথম বস্তুটির উপর প্রযুক্ত বলকে প্রতিক্রিয়া (Reaction) বলে ।
মনে কর, A বস্তু B বস্তুর উপর FAB বল এবং B বস্তু A বস্তুর উপর FBA বল প্রয়োগ করে । তাহলে তৃতীয় গতিসূত্র অনুসারে, FAB = – FBA , ঋণাত্মক চিহ্ন বোঝায় যে বল দুটির অভিমুখ বিপরীত ।

আলোচনা:
(i) বস্তু দুটি স্থির থাকুক বা সচল হোক একে অপরকে স্পর্শ করে থাকুক বা পরস্পর থেকে দূরে থাকো এই সূত্রটি সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয় ।
(ii) প্রকৃতিতে বল সব সময় জোড়ায় জোড়ায় ক্রিয়া করে । প্রকৃতিতে একক বিচ্ছিন্ন বল বলে কিছু থাকতে পারে না । আমরা যখন একটি বল ক্রিয়া করছে বলি তখন আসলে দুটো ক্রিয়াশীল বলের মধ্যে একটি কথাই বলি । এই বল দুটি একে অপরের পূরক । যেকোনো একটিকে ক্রিয়া ও অন্যটি কে প্রতিক্রিয়া বলা যায় ।
(iii) ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক কার্যকারণ সম্পর্ক নয় । ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া একে অন্যের আগে বা পরে ক্রিয়াশীল হয় না । বল দুটি সবসময় একসঙ্গে ক্রিয়া করে । ক্রিয়া যতক্ষণ স্থায়ী হয় প্রতিক্রিয়াও ঠিক ততক্ষণ স্থায়ী হয় । ক্রিয়া বন্ধ হলে প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায় ।
(iv) কোন বস্তুর উপর ক্রিয়া করলেই যদি সঙ্গে সঙ্গে সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয় তাহলে বস্তু গতিশীল হয় কিভাবে ?
সমান ও বিপরীতমুখী দুটি বল একই বস্তুর উপর ক্রিয়া করলে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে, অর্থাৎ বস্তুটি স্থির থাকে, গতিশীল হয় না । কিন্তু ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া সব সময় দুটি আলাদা বস্তুর উপর ক্রিয়া করে, কখনও একই বস্তুর উপর ক্রিয়া করে না । এইজন্য ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বল দুটি কখনোই সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে না, বলে বস্তু গতিশীল হয় ।
যেমন – আমি একটি বইকে ঠেললাম, নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র অনুসারে বইটি আমাকে বিপরীত দিকে ঠেলল । তাহলে বইটি নড়ে কি করে ? ধর, আমি বইটিকে F বলে ঠেললাম; এটি হলো ক্রিয়া । বইটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া F আমার হাতের উপর প্রয়োগ করবে । অতএব বইটির উপর কেবলমাত্র একটিই বল (F) সামনের দিকে ক্রিয়া করবে এবং এই বলের ক্রিয়ায় বইটি নড়বে ।

নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের উদাহরণ:
(i) টেবিলের উপর W ওজনের একটি বই আছে । ওজন খারাপভাবে নিচের দিকে ক্রিয়া করে । কাজেই টেবিলের উপর W পরিমাণ বল খারা ভাবে নিচের দিকে ক্রিয়া করে । তৃতীয় সূত্রে অনুযায়ী টেবিলটি বইয়ের উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল N প্রয়োগ করে । অতএব টেবিলের উপর বই কর্তৃক প্রযুক্ত W বলটি ক্রিয়া এবং বইয়ের উপর টেবিল কর্তৃক প্রযুক্ত N বলটি হলো প্রতিক্রিয়া। সুতরাং W = – N হয় ।

(ii) অভিকর্ষের টানে কোন বস্তু যখন নিচের দিকে পড়ে তখন বস্তুটির ওজন W খাড়া নিচের দিকে ক্রিয়া করে । তৃতীয় সূত্র অনুসারে বস্তুটিও বিপরীতমুখী W বলে পৃথিবীকে আকর্ষণ করে । এখানে পৃথিবী কর্তৃক প্রযুক্ত বল অর্থাৎ বস্তুর ওজন W হলো ক্রিয়া এবং বস্তু কর্তৃক পৃথিবীর উপর প্রযুক্ত বিপরীতমুখী বল W হলো প্রতিক্রিয়া ।
আপেল এবং পৃথিবীর পরস্পরকে বিপরীত দিকে সমান বলে টানে । তাহলে কেবল আপেল পৃথিবীর দিকে পড়ে কেন ? পৃথিবী আপেলের দিকে ছুটে যায় না কেন ?
ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সমান বলে আপেল পৃথিবীকে যে বলে আকর্ষণ করে, পৃথিবীও সেই একই বলে আপেলকে আকর্ষণ করে । কিন্তু পৃথিবীর ভর আপেলটির ভরের তুলনায় অনেক গুণ বেশি । আমরা জানি, ত্বরণ = প্রযুক্ত বল/ভর । প্রযুক্ত বল একই হলে ত্বরণ সমানুপাতিক 1/ভর । কাজেই পৃথিবীর ত্বরণ আপেলের ত্বরণের তুলনায় এত ক্ষুদ্র যে তা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য হয় না । তাই পৃথিবীতে আপেলের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায় না । আবার আপেলের ত্বরণ অনেক বেশি বলে আপেলকে আমরা পৃথিবীর দিকে পড়তে দেখি ।
(iii) চুম্বক লোহাকে আকর্ষণ করে – লোহাও সঙ্গে সঙ্গে চুম্বককে সমান বিপরীতমুখী বলে নিজের দিকে আকর্ষণ করে । একটি চুম্বককে একটি লোহার টুকরোর কাছে ধরলে লোহার টুকরোটি চুম্বকের টানে ওর দিকে এগিয়ে যায় । কিন্তু লোহার টুকরোটিকে হাতে ধরে চুম্বকটিকে চলতে দিলে দেখা যায় যে চুম্বকটি, লোহার টুকরোর আকর্ষণে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
(iv) কামান থেকে গোলা ছুঁড়লে গোলাটি প্রচন্ড বেগে সামনের দিকে ছুটে যায় । কামানটি গোলার উপর যদি F বল প্রয়োগ করে তাহলে গোলাটিও কামানের উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল F প্রয়োগ করে । এই প্রতিক্রিয়া বলের জন্যই কামানটি পিছনে হটে । বন্দুক থেকে গুলি ছুড়লেও একই ঘটনা ঘটে ।


(v) আরোহী নৌকা থেকে তীরে নামলে নৌকাটি পিছনের দিকে সরে যায় । নৌকা থেকে লাফ দেওয়ার সময় আরোহী নৌকোর উপর একটি বল প্রয়োগ করে; এর ফলে নৌকোটি পিছনের দিকে সরে যায় । সাথে সাথে নৌকোটি আরোহীর উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে; এর ফলে আরোহী সামনের দিকে গতিশীল হয়ে তীরে পৌঁছায় ।

(vi) ক্রিকেট বল ক্যাচ ধরার সময় বলটি হাতে এসে আঘাত করে । ফলে হাত ক্রিকেট বল টির উপর সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে । এই বলের ক্রিয়ায় ক্রিকেট বলটি হাত থেকে ছিটকে যেতে পারে । এইজন্য বল হাতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিল্ডার হাত একটু পিছনে টেনে নেন । হাত পিছনে টানলে ক্রিকেট বলটির আঘাতের তীব্রতা কমে যায় বলে প্রতিক্রিয়া বলও কমে যায় । তাই বলটি ছিটকে যাওয়ার অর্থাৎ ক্যাচ ফেলে দেওয়ার সম্ভাবনা কমে ।
(vii) রকেট বা জেট প্লেনে জ্বালানি দহনের ফলে অতি উচ্চচাপে গ্যাস উৎপন্ন হয় । এই গ্যাস রকেট বা জেট প্লেনের পিছনের দিকে একটি সরু নলের মধ্য দিয়ে তীব্র বেগে বেরিয়ে আসে । এর ফলে যে প্রচন্ড বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল সৃষ্টি হয় সেই বলের ক্রিয়ায় রকেট বা জেট প্লেন তীব্র বেগে সামনের দিকে এগিয়ে যায় ।

হাউই বাজিতে আগুন দিলে বারুদের দহনের ফলে উৎপন্ন গ্যাস তীব্র বেগে নিচে ছিদ্র দিয়ে বের হতে থাকে এই জন্য হাউই টি উপরের দিকে উঠে যায় ।
একটি বেলুনের মধ্যে বায়ু ভর্তি করে ওর মুখ খোলা অবস্থায় নিচের দিকে ছেড়ে দিলে মুখ দিয়ে বেগে বায়ু বেরুতে থাকায় বেলুন কি উপরের দিকে উঠে যায় ।
(viii) উড়ন্ত পাখি দুটি ডানা দিয়ে বাতাসকে পিছনের দিকে ঠেলে দেয় অর্থাৎ বল প্রয়োগ করে । ফলে বাতাস পাখির ডানাতে সমান বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে । এই প্রতিক্রিয়া বলের একটি অংশ পাখিকে সামনের দিকে এগিয়ে দেয় বলে পাখি উড়তে পারে । বায়ুশূন্য স্থানে পাখি উড়তে পারে না । কারণ বায়ু না থাকায় সেখানে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয় না।
(ix) হাঁটার সময় আমরা মাটির উপর পা দিয়ে তির্যকভাবে বল প্রয়োগ করি । সঙ্গে সঙ্গে মাটি পায়ের উপর সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে । এই প্রতিক্রিয়া বলের অনুভূমিক উপাংশ আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে দেয় । GR (Ground Reaction) মাটির প্রতিক্রিয়া বল ।
(x) টানা রিকশায় রিকশাচালক হাতলের উপর F বল প্রয়োগ করে রিকশাকে সামনের দিকে টানে; সঙ্গে সঙ্গে রিকশা চালককে পিছনের দিকে সমান এবং বিপরীতমুখী F বলে টানতে থাকে । স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে যে চালকসহ রিকসাটি সামনের দিকে এগিয়ে যায় কি করে?
রিকশাকে সামনের দিকে চালাবার জন্য চালক মাটির উপর তির্যকভাবে বল প্রয়োগ করে । সঙ্গে সঙ্গে মাটি চালকের উপর সমান ও বিপরী প্রতিক্রিয়া বল N প্রয়োগ করে । এই বল কে অনুভূমির দিকে এবং উলম্ব দিকে যথাক্রমে H এবং V উপাংশে বিশ্লেষণ করা যায় । উলম্ব উপাংশ V চালকের ওজনকে প্রতিমিত করে । এখন যদি অনুভূমিক উপাংশ H চালকের উপর রিক্সা দ্বারা পিছনের দিকে প্রযুক্ত প্রতিক্রিয়া বল F-র চেয়ে বেশি হয় তাহলে (H – F) বলের ক্রিয়া চালক সামনের দিকে এগিয়ে যায় ।
বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া ( Different types of Action and Reaction)
- টান (Pull or tension): হুকে বাধা দড়িটিকে টানলে দড়ির মাধ্যমে একটি বল হুকের উপর ক্রিয়া করে । হুকও সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া বল হাতের উপর প্রয়োগ করে। এখানে ক্রিয়ার ফলে হুকটি হাতের দিকে এবং প্রতিক্রিয়ার ফলে হাত হুকের দিকে আকৃষ্ট হয় । এই অবস্থায় দড়ির দৈর্ঘ্য বরাবর টান ক্রিয়া করছে বলা হয় ।
দুটি বস্তুর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন যে ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া বল কোন জড় মাধ্যমের সাহায্যে প্রযুক্ত হয়ে বস্তু দুটিকে পরস্পরের দিকে আনতে চায় অথবা ওদের দূরে সরে যেতে বাধা দেয়, তাকে টান বলে । টান নমনীয় বস্তু যেমন দড়ি সুতো ইত্যাদি অথবা কোন দৃঢ়বস্তুর মাধ্যমে প্রযুক্ত হতে পারে ।
- ধাক্কা (Push): এক ব্যক্তি হাত দিয়ে দেয়ালের উপরে চাপ দিচ্ছে অর্থাৎ দেওয়ালের উপরে বল প্রয়োগ করছে । ফলে দেওয়াল ওই ব্যক্তির হাতের উপর সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করছে । এর অর্থ হল ওই ব্যক্তি এবং দেওয়াল পরস্পরকে দূরে সরাতে চেষ্টা করছে ।
দুটি বস্তুর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন যে ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া বল বস্তু দুটিকে পরস্পর থেকে দূরে সরাতে চায় অথবা ওদের কাছে আসতে বাধা দেয়, তাকে ধাক্কা বলে । ধাক্কা শুধুমাত্র দৃঢ় বস্তুর মাধ্যমে প্রযুক্ত হতে পারে কোন নমনীয় বস্তুর মাধ্যমে ধাক্কা কখনো প্রযুক্ত হতে পারে না ।
- ঘাত (Thrust): একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রফল জুড়ে ক্রিয়া করলে ধাক্কাকে ঘাট বলা হয় । ধরা যাক, একটি কাঠের ব্লক একটি অনুভূমির টেবিলের উপর রাখা আছে । ব্লকের ওজনের (w) দরুন ব্লকটি টেবিলের উপর একটি নিম্নমুখী বল প্রয়োগ করে । নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র অনুযায়ী টেবিলের তলও বস্তুটির উপর একটি সমমানের ও বিপরীতমুখী অর্থাৎ, ঊর্ধ্বমুখী বল (R) প্রয়োগ করে । অর্থাৎ R = -w । এক্ষেত্রে ব্লক কর্তৃক টেবিলের উপর প্রযুক্ত বলকে ক্রিয়া বললে টেবিলের তল কর্তৃক ব্লকটির উপর প্রযুক্ত বল হল প্রতিক্রিয়া । এই ধরনের ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়াকে বলা হয় ঘাত ।
- সংঘাত (Impact or Collision): একটি গতিশীল বাস যখন কোন লরিকে আঘাত করে তখন বাসটি লরিটির উপর একটি বল প্রয়োগ করে । এর ফলে লরিটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । একই সঙ্গে লরিটি বাসটির উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে, যা বাসটির ক্ষতিসাধন করতে পারে । এই ক্ষেত্রে বাস কর্তৃক লরির উপর প্রযুক্ত বলকে ক্রিয়া বললে লরি কর্তৃক বাঁশের উপর প্রযুক্ত বল হল প্রতিক্রিয়া। এই ধরনের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াকে বলা হয় সংঘাত ।
- আকর্ষণ ও বিকর্ষণ (Attraction and Repulsion): দূর থেকে অর্থাৎ সংস্পর্শ ছাড়াই দুটি বস্তুর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বল বস্তু দুটোকে পরস্পরের দিকে আনতে চায় তাকে আকর্ষণ বলে । ওই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বল যদি বস্তু দুটিকে পরস্পর থেকে দূরে সরাতে চায়, তবে তাকে বিকর্ষণ বলে । মহাকর্ষীয় বল, তড়িৎ বল এবং চৌম্বক বল হল এই ধরনের বল । বস্তুটির মধ্যে কোন বাস্তব মাধ্যম না থাকলেও এরূপ বল ক্রিয়া করতে পারে । বলের মান মাধ্যমিক প্রকৃতির উপর নির্ভর করতে পারে, আবার নাও করতে পারে । যেমন মহাকর্ষ বলের মান মাধ্যমে প্রকৃতির উপর নির্ভর করে না, তো তড়িৎ বল এবং চৌম্বক বলের মান মাধ্যমে প্রকৃতির উপর নির্ভর করে ।
- ঘর্ষণ (Friction): যখন কোন বস্তু অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে সচল হয় বা হতে চেষ্টা করে, তখন দ্বিতীয় বস্তুটি প্রথম বস্তটির উপর একটি প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে । একে ঘর্ষণ বল বলে । এই বল সবসময় বস্তুর গতির বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে ওই গতিকে বাধা দেয় ।
উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে সব ধরনের বলকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় –
(i) স্পর্শজনিত বল (Contact forces): দুটি বস্তু সংস্পর্শে থাকলে ওদের পারস্পরিক ক্রিয়ায় যে সমস্ত বলগুলি কার্যকর হয় তাদের বলা হয় স্পর্শ জনিত বল।যেমন – টান, ধাক্কা, ঘাত, ঘর্ষণ ইত্যাদি।
(ii) ক্ষেত্রজনিত বল (Field forces): সংস্পর্শ ছাড়াই দুটি বস্তুর পারস্পরিক ক্রিয়ায় যে সমস্ত ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বল উৎপন্ন হয় তাদের বলা হয় ক্ষেত্রজনিত বল । যেমন – মহাকর্ষীয় বল, তড়িৎ আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল এবং চৌম্বক বল ।